ঢাকা,রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

খরুলিয়াতে মাদক বিক্রিতে বাঁধা দেওয়ায় গ্রামবাসীর উপর গুলিবর্ষণ: নারীসহ আহত ৮

নিজস্ব প্রতিবেদক ::  কক্সবাজার সদর উপজেলার খরুলিয়া চরপাড়া এলাকায় গ্রামবাসীর উপর গুলিবর্ষণ করেছে মাদক ব্যবসায়ীরা। এতে নারী ও শিশুসহ ৮ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছে।

সোমবার (১১ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে বেপারিপাড়া ও চরপাড়া এলাকায় এঘটনা ঘটে। আহত গ্রামবাসীর অভিযোগ, মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের ওপর গুলিবর্ষণ ও হামলা চালিয়েছেন।

আহতরা হলেন, রমজান আলী (২০), কহিনুর আক্তার (৩২), সুমাইয়া আক্তার (৫), কামাল হোসেন (১৬), কবির আহাম্মদ (৪৫), ছমিরা আক্তার (১৮), আনোয়ারা বেগম (১৯) ও সুহানা (৫), তারা সবাই ঝিলংজা ইউনিয়নের খরুলিয়া চরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

এলাকাবাসী জানান, খরুলিয়া বেপারিপাড়া গ্রামের আশরাফ আলীর ছেলে রমজান আলী ও সামশুল হকের ছেলে মো: শফি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদকের ব্যবসা করে আসছেন। পাশাপাশি গ্রাম হওয়ায় চরপাড়া এলাকার গ্রামবাসী তাঁদের মাদকের ব্যবসায় বেশ কয়েকবার বাধা দেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে স্থানীয় কলিম উল্লার ছেলে রামজান আলীসহ বেশ কয়েকজন আবারও মোহাম্মদ শফি ও রমজান আলীকে মাদক ব্যবসা বন্ধ করার কথা বলেন।

এ সময় ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁদের সহযোগী বেপারিপাড়া গ্রামের জাফর আলমের ছেলে জামাল হোসেন, জয়নাল আবদিন প্রকাশ জনুর ছেলে জসিম উদ্দিন, মো আলীর ছেলে সহোদর দুই ভাই রাশেদ, মোরশেদ ও আবুল হোসেনের ছেলে জাহেদসহ ১৫-২০ জনের একদল মাদক ব্যবসায়ী দেশীয় অস্ত্র, রামদা, চাপাতি ও লোহার রড দিয়ে রমজান আলীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে।

এ সময় রমজানের আত্মীয় ও স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে এলে তাদের উপর এলোপাথারী গুলি ছুড়লে ওই গ্রামের উল্লেখিত নারী ও শিশুসহ ৮ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুত্বর আহত হয়। পরে আহতদের উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহতরা জানান, উল্লেখিত মাদক ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে বেপারিপাড়া ও চরপাড়া গ্রামে জামাল হোসেন ও রমজান আলীসহ পাঁচ-ছয়জন নিজ বাড়িসহ এলাকায় প্রকাশ্যে মদ, গাঁজা, ফেনসিডিল ও ইয়াবা বিক্রি করছেন। আগে তাঁরা কিছুটা গোপনে এ ব্যবসা চালালেও মাস তিনেক হলো প্রকাশ্যেই সব করছেন। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে মাদকসেবীরা মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাস নিয়ে এখানে আসে। বিকেল থেকে এদের আনাগোনা বাড়ে। প্রতিদিন বিকেলে এখানে মাদকসেবীদের অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেল ও সাত-আটটি মাইক্রোবাস এসে ভেড়ে।

এদের অত্যাচারে নারী, শিশুসহ সাধারণ মানুষের পথচলাই কঠিন হয়ে পড়ে। বিশেষ করে নারী ও ছাত্রীরা প্রায়ই এদের দ্বারা উত্ত্যক্ত হয়। মাদক ব্যবসায়ীদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলেই কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই নিরীহ গ্রামবাসীর উপর গুলি চালায়। এই ভয়ে কেউ কিছু বলার সাহস পায়না। তাই তারা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদ বলেন, শুনেছি বেপারিপাড়া ও চরপাড়া গ্রামবাসীর মাঝে গুলাগুলি হয়েছে। এখানে মাদক কারবারীদের তৎপরতা বেড়েছে কয়েকগুন। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান বলেন, শুনেছি গ্রামবাসীর উপর হামলা হয়েছে। বেপারিপাড়া ও চরপাড়ায় মাদকের ভয়াবহ বিস্তার ঘটেছে। করোনা ভাইরাসের কারণে সেদিকে নজর দেওয়া যাচ্ছেনা।

সদর থানার ওসি (তদন্ত) খাইরুজ্জামানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করেও কল না ধরায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

পাঠকের মতামত: